গাজীপুরে তিতাসের অবৈধ গ্যাস লাইন
শাহ সামসুল হক রিপন, গাজীপুরতিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড কোম্পানি গাজীপুরে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেও থামাতে পারছে না অবধৈ গ্যাস সংযোগ। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে অত্যাধুনিক অনেক বহুতল ভবন রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগের পেছনে রয়েছে স্থানীয় গ্যাস অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একটি প্রভাবশালী দালাল চক্র। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বাসা-বাড়িতে রাতের আঁধারে ওই দালাল চক্রটি লাখও টাকার বিনিময়ে এসব অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে চক্রটির বেশির ভাগ সদস্যরাই হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থক।
গাজীপুর তিতাস কর্তৃপক্ষ বলছে, গত অক্টোবার মাসে একাধিক অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জরিমানাসহ থানায় মামলাও করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের ধারণা এখনও গাজীপুরে ২৫-৩০ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আমবাগ, কোনাবাড়ি, কাশিমপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে এমন বহু অবৈধ সংযোগ ও বহুতল ভবনের সন্ধান পাওয়া গেছে। কোনাবাড়ির হরিণাচালার অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী বাহার মিয়া জানান, তিনি দুই বছর আগে বৈধ গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি তার ৬ তলা বাড়িতে তিতাস গ্যাস ব্যবহার করছেন। রাজধানীর নিকটবর্তী গাজীপুরে দ্রুত সম্প্রসারিত শহর হিসেবে এখানে নতুন নতুন বাসা-বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্তে গত দু’বছর থেকে আবাসিক স্থাপনায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও থেমে নেই ওই সব বাসা-বাড়িতে অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগ। গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার এক বাড়িওয়ালা জানান, তিনি পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করে গ্যাসের জন্য ভাড়া দিতে পারছিলেন না। পরে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন। কাশিমপুর মৌজার লস্কর চালা এলাকায় গত কয়েক দিনে রাতের আঁধারে তিন শতাধিক বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগের তীর স্থানীয় শহীদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন একটি চক্রের বিরুদ্ধে। তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও পুলিশ তাকে ছায়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাতে গ্যাস সংযোগ দেয়ার সময় একাধিকবার পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলেও পুলিশ তাদের ব্যস্ততা দেখিয়ে ঘটনাস্থলে যায়নি এমনি কি পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদুল্লাহসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ডজনখানেকের বেশি মামলা থাকলেও তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কাশিমপুর থানার ওসি আকবর আলী খান বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাজীপুর তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের ম্যানেজার অজিত চন্দ্র দেব জানান, অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চলমান। এ অভিযানে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা রয়েছে। এরই মধ্যে জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় শত শত অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

0 Comments:
Post a Comment