বগুড়ায় রাতে ঘরে ঢুকে নববধূকে মারধর
বগুড়া ব্যুরোবগুড়ার গাবতলীতে নববধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই কর্মকর্তার নাম রিপন মিয়া। তিনি গাবতলী থানার এসআই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তাকে না জানিয়ে মীমাংসা, বিয়ে ও তাকে উৎকোচ না দেয়ায় রাতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে নববধূকে মারধর করেন তিনি। রোববার রাতে উপজেলার খুপি মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত নববধূ মনিরা আকতার কেমিকে (১৯) বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এসআই রিপন মিয়াকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জানা যায়, গাবতলী উপজেলার খুপি মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে এমরান হোসেন সুইট ও একই উপজেলার খুপি গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে মনিরা আকতার কেমি স্থানীয় ফজিলা আজিজ টেকনিক্যাল
ইন্সটিটিউটের
শিক্ষার্থী। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছু বিষয় নিয়ে দু’জনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। কেমি ১৪ সেপ্টেম্বর সুইটের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের মামলা করেন। গাবতলী থানা পুলিশ পরদিন সুইটকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। এদিকে কেমি ও সুইটের পরিবার বিরোধ মীমাংসা করে আদালতে কাগজপত্র জমা দিলে ৩১ অক্টোবর সুইটের জামিন হয়। ১ নভেম্বর পারিবারিকভাবে দু’জনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুইট নববধূ কেমিকে গাবতলীর খুপি মধ্যপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান। এমরান হোসেন সুইট অভিযোগ করেন, মামলা মীমাংসা ও কেমিকে বিয়ে করায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিপন মিয়া ক্ষুব্ধ হন। এসআই তাকে ও কেমিকে হত্যার হুমকি দেন ও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। মাদক মামলা দিয়ে জেলে দেয়ারও হুমকি দেন পুলিশ কর্মকর্তা। রোববার রাত ১০টার দিকে সাদা পোশাকে এসআই রিপন মিয়াসহ ৪-৫ জন দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকেন। সুইট টের পেয়ে পালিয়ে যায়। এরপর তারা নববধূ কেমির কাছে জানতে চান সুইট কোথায়। কেমি বলতে দেরি করায় এসআই রিপন লাঠি ও টর্চলাইট দিয়ে কেমিকে মারধর করেন। এছাড়া তার মাথায় কিলঘুষি ও চড়-থাপ্পড় দেন। কেমির আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার লোকজন ঘেরাও করেন। রিপন মিয়া ও তার সহযোগীরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই বাড়ি ত্যাগ করেন। এমরান হোসেন সুইট জানান, রাত ১২টার দিকে তার আহত স্ত্রী কেমিকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, ‘গাবতলী থানার এসআই রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে নিরীহ জনগণকে পকেটে মাদক ঢুকিয়ে গ্রেফতার করে টাকা আদায় ও হয়রানির অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি অবশ্যই আইনের আশ্রয় নেব।’ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নববধূ মনিরা আকতার কেমি সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনে বর্ণনা দেন এবং এর বিচার দাবি করেন। সন্ধ্যায় গাবতলী থানার ওসি সেলিম হোসেন জানান, ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত চলছে। পুলিশ সুপার আপাতত তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করেছেন। এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন এসআই রিপন মিয়া। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘ফোর্স নিয়ে আসামি ধরতে গিয়েছিলাম। কাউকে মারধর করা হয়নি। নববধূ কেমি ভয় পেয়ে চিৎকার করেছে।’

0 Comments:
Post a Comment